পড়াশুনা

রচনা : আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা ২০২৩

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা নিয়ে লেখা পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। এই পোস্টে আরো জানতে পারবেন, বাংলাদেশের মানচিত্র pdf, বাংলাদেশের মানচিত্র pdf download, বাংলাদেশের মানচিত্র অংকন, বাংলাদেশের মানচিত্র উপজেলাসহ, বাংলাদেশের মানচিএ, বাংলাদেশের মানচিত্র hd, বাংলাদেশের মানচিত্র ছবি, বাংলাদেশের ডিজিটাল মানচিত্র ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

এবং বাংলাদেশের মানচিত্র পিডিএফ, বাংলাদেশের মানচিত্র পরিচিতি, বাংলাদেশের মানচিত্র জেলাসহ, বাংলাদেশের মানচিত্র জেলা উপজেলা সহ pdf, বাংলাদেশের মানচিত্র বিভাগ, বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকার নিয়ম, বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকার সহজ উপায়, বাংলাদেশের মানচিত্র জেলা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

রচনার পয়েন্ট তালিকাঃ

  •  
    ভূমিকা
  •  
    তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি
  •  
    তথ্য প্রযুক্তির কয়েকটি বিশেষ দিক, বৈশিষ্ট্য ও স্বরূপ
  •  
    উন্নয়ন সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
  •  
    তথ্য যোগাযোগের মহাসড়কে বাংলাদেশ
  •  
    শিক্ষা
  •  
    স্বাস্থ্য
  •  
    নারী উন্নয়ন
  •  
    যুব উন্নয়ন
  •  
    ইন্টানেট সার্ভিস
  •  
    তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ডাটা এন্ট্রি
  •  
    ই-বিজনেস
  •  
    ই-ব্যাংক
  •  
    টেলিযোগাযোগ
  •  
    অন্যান্য দিক
  •  
    উপসংহার

ভূমিকা – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনাঃ

শিল্প বিপ্লবের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন পৃথিবীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন উন্নতির ফলে গোটা বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। যে জাতি তথ্য প্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশী উন্নত।

বিশ্ব পরিমন্ডলে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্য প্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। অল্প সময়েই এদেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে তথ্য যোগাযোগের মহাসড়কে অবস্থান করছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Information and Communication Technology (ICT)। প্রযুক্তি ব্যবহার কেন্দ্রিক তথ্য আদান-প্রদান ও যোগাযোগ আইসিটির মূলকথা। এর মধ্যে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণ বা আদান-প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাকে এক কথায় বলা হয় Information Technology (IT)।

অন্যদিকে এসব প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ রক্ষার প্রক্রিয়াকে নিয়ে গড়ে উঠেছে Communication Technology বা যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণা। টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ফ্যাক্স, ইলেক্ট্রনিক মেইল, ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রধান প্রধান যোগাযোগ প্রযুক্তির উপাদান।

তথ্য প্রযুক্তির কয়েকটি বিশেষ দিক

ডাটাবেস উন্নয়ন প্রযুক্তি, সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রযুক্তি, নেটওয়ার্ক, মুদ্রণ ও রিপ্রোগ্রামিং প্রযুক্তি, তথ্যভান্ডার প্রযুক্তি, বিনোদন প্রযুক্তি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ইত্যাদি সবই তথ্য প্রযুক্তির এক একটি উল্লেখযোগ্য দিক।

তথ্য প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য ও স্বরূপ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিশাল উন্নতির ফলে কোনো কিছু প্রাপ্তি যেমন সহজলভ্য হয়েছে, তেমনি অতি দ্রুত যোগাযোগ করা যাচ্ছে। বিশ্বময় কম্পিউটারের বিস্ময়কর বিস্তৃতির সাথে সাথে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে।

তথ্য প্রযুক্তির এ বিস্ময়কর উন্নতি ঘটেছে কম্পিউটার, ডিজিটাল টেলিফোন ও সাবমেরিন ক্যাবলের সহায়তায়। ইন্টানেট এবং ই-মেইলের মাধ্যমে সারাবিশ্বের নাগরিক সমাজ একে অন্যের অতি নিকটে চলে এসেছে।

ইন্টারনেটের আওতায় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেকোনো বিষয়ে পুস্তুক, পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও টিভি চ্যানেলে থেকে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে।

সারাবিশ্বের অগণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমৃদ্ধ গবেষণাগার, সংবাদ সংস্থা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ কোটি কোটি ব্যাক্তি কম্পিউটারের সাথে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে এ মহাযোগাযোগ গড়ে তুলেছে।

উন্নয়ন সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিই আগামী দিনের জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে এবং অর্থনেতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করবে।

ডিজিটাল অবকাঠামো যেমন ইন্টারনেট সেবা বা ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ইত্যাদিতে বিনিয়োগ হয়ে উঠছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি।

তথ্য যোগাযোগের মহাসড়কে বাংলাদেশ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ সময় ও দূরত্বকে জয় করেছে। বিশ্বকে এনেছে হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশও তথ্য যোগাযোগের মহাসড়কের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা গ্রহণ করতে চাচ্ছে।

খুব অল্প সময়েই এ দেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেছে।

শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

বাংলাদেশের মোট জনংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুব সমাজ। এ বিশাল যুব সম্প্রদায়কে দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ইতোমধ্যেই দেশের ৬৪টি জেলায় ৭০টি কেন্দ্রের মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কিং, কম্পিউটার বেসিক কোর্স, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন সহ ইত্যাদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ইন্টারনেট সার্ভিসঃ

ইন্টারনেট সেবা আরো সহজ করে দিতে বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে থ্রিজি সেবা। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ফ্রি ওয়াইফাই জোন তৈরি করা হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ সরকার ৭০০ কোটি টাকার একটি বিশাল প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ডাটা এন্ট্রি

তথ্য সংগ্রহ এবং সংরক্ষণে বিপ্লব এনেছে তথ্য প্রযুক্তি। যেকোনো তথ্য যেমন- আদমশুমারির তথ্য, ভোটার তালিকা ইত্যাদি যথাযথভাবে কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে চালু করা হয়েছে ই-ইউনিয়ন সেবা।

ই-বিজনেস – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ইন্টারনেট নির্ভর বাণিজ্য ই-কমার্স অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাঠামো বদলে দিয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য কেনাবেচা চলছে। ক্রেতার সাথে বিক্রিতার সরাসরি সংযোগ ঘটছে। বিক্রেতারা তাদের পণ্য বিক্রির জন্য ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন।

ই-ব্যাংকিং এ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ব্যাংকিং খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবস্থা। সব ব্যাংকেই এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়েছে। গ্রাহকেরা সহজেই ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার যেকোনো সময়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন এবং চাহিদা মতো খরচ করতে পারছেন।

টেলিযোগাযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

আইসিটি মহাসড়কের অন্যতম প্রধান দিক টেলিযোগাযোগ। দেশে বর্তমান ৬টি মোবাইলফোন কোম্পানি সেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৩ এর মতে দেশে বর্তমানে ৯ কোটি ফোন গ্রাহক রয়েছে। বর্তমানে মোবাইল খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এখাত থেকে বিপুল পরিমাণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর, ভ্যাট ইত্যাদি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অন্যান্য দিক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিস্তারে সরকার হাইটেক পার্ক নির্মাণ, আইসিটি ইনকিউরেটর স্থাপন, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া সাবমেরিন বিকল্প ব্যবস্থায় সংযুক্তি, আইসিটি বিজনেস প্রমোশন সেন্টার স্থাপন এবং দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১’ উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় রয়েছে।

https://www.youtube.com/watch?v=CfAuRKBdALQ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনার উপসংহার

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত প্রসারমান ও মূল্যবান শিল্প। তাই একবিংশ শতাব্দীর জটিল ও কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রতিযোগিতামূলক এ বিশ্বে টিকে থাকতে হলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের কোনো বিকল্প নেই।

সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমন্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা (২)

ভূমিকাঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

আধুনিক যুগে যখন বিশ্বায়নের প্রভাব পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্তর থেকে আমাদের ঘরের অন্দরমহল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে তখন বিশ্বব্যাপী তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি সাথে সাথে প্রয়োজন ও গুরুত্ব বেড়েছে তথ্য ও যোগাযোগেরও।

আর ক্রমবর্ধমান তথ্য এবং যোগাযোগের অব্যবস্থা দূর করে মানুষের জীবনকে আরো সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার ক্ষেত্রে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি হল আধুনিক যুগে মানুষের উদ্ভাবিত সেই জাদুকাঠি যার প্রয়োগে মানুষ বারবার একদিকে নিজের সমাজ তথা ব্যক্তিগত জীবনকে যেমন সহজতর করে তুলেছে, তেমনই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে বহুগুণে।

সেই আধুনিক সভ্যতারই অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনার উদ্দেশ্যেই এই উপস্থাপনা।

আধুনিক প্রযুক্তির সূচনাকালঃ রচনা

আধুনিক প্রযুক্তির জন্মলগ্ন বলে ধরে নেওয়া হয় উনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় শিল্প বিপ্লবের কালকে। এই সময় থেকেই জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ ব্যাপকহারে আরম্ভ হয়।

তবে তখনো পৃথিবীর জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রাগত জটিলতা কম থাকার দরুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব তেমনভাবে অনুভূত হয়নি। কিন্তু সময় যত এগোয় ততই শিল্প বিপ্লবের ব্যাপক উৎপাদনের ফল মানুষ পেতে শুরু করে।

এরই সাথে পৃথিবীর জনসংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়। মোটামুটি বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হতে থাকে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য অনুভূত প্রয়োজনের অনুকূলে উপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভূত হয়।

কি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ রচনা

সাধারণভাবে দেখতে গেলে মনে হবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো এমন এক প্রযুক্তি যা আধুনিক সভ্যতার তথ্য ও যোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যাপারে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু আসলে এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্তার শুধুমাত্র এই দুটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নেই।

প্রকৃতপক্ষে বর্তমান যুগে তথ্যকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এবং এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই বিকাশ লাভ করেছে আধুনিক যুগের বিভিন্ন ক্ষেত্র।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত সেই সকল তথ্যের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থাপনা তথা বিতরণের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইনফর্মেশনাল ম্যানেজমেন্টের কাজ করে থাকে।

বিশ্বব্যাপী এই মহাযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ঘনিষ্ঠভাবে নির্ভর করে কম্পিউটিং, মাইক্রোইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয়গুলির ওপর।

ইতিহাসের পাতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ রচনা


ইতিহাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা প্রথম অনুভূত হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর থেকেই পৃথিবীর আন্তর্জাতিক আর্থসামাজিক চেহারা দ্রুত বদলে যেতে থাকে। বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ঢল নেমে যায় নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে নিজের দেশকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে।

তারপর বিংশ শতকের মধ্যভাগে বিশ্বজুড়ে আরো একবার দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামা বেজে যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই সর্বপ্রথম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সামান্যতম ব্যবহার হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে পৃথিবীর পটচিত্র আরো তাড়াতাড়ি বদলে যেতে থাকে। পৃথিবীর দুই মহাশক্তির মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও নোংরা প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও। এরপর সত্তরের দশকে পৃথিবীতে ইন্টারনেট এর আগমন ঘটলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে একপ্রকার বিপ্লব ঘটে যায়। সেই সময় থেকে অতি দ্রুত পৃথিবীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির চরিত্র বিবর্তিত হতে থাকে।

বর্তমানের আলোকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ রচনা


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সত্তরের দশকেই প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমান যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গতিবিধি আধুনিক পৃথিবী তথা ব্যক্তিগত জীবনের সর্বত্র। আধুনিক শহুরে জীবনের সম্ভবত এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে আজকাল তথ্যপ্রযুক্তি আধিপত্য বিস্তার লাভ করে নি।

সময় যতই এগোচ্ছে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ঘটিয়ে চলেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রভাবও অনুভূত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

তথ্যপ্রযুক্তি ও শাসন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনাঃ রচনা


আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থার ধারক বাহক তথা পরিচালক হল তথ্যপ্রযুক্তি। যে পৃথিবীতে তথ্য বা ডেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান সম্পদ বলে গণ্য হয় সেখানে তথ্যপ্রযুক্তির এখানে ভূমিকা আশ্চর্যকর নয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্ধারণ থেকে শুরু করে জাতীয় শাসন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা সবকিছুই তথ্য প্রযুক্তির ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল।

এছাড়া সময়ের সাথে সাথে বিশ্বব্যবস্থা যত বেশি করে ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততই তথ্য প্রযুক্তির উপর আমাদের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির মূল কাজই হলো তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণ। নিজস্ব এই অনন্য ভূমিকার দ্বারাই তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিক সকল শাসন সংক্রান্ত ক্ষেত্রকে সমূলে নিয়ন্ত্রণ করে। সেজন্য তথ্যপ্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ত্রুটি ঘটলে যেকোনো সময় শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

চিকিৎসা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ রচনা


তথ্যপ্রযুক্তির অপর একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শাখা বিস্তার লাভ করেছে চিকিৎসাক্ষেত্রে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন নিত্য নতুন আবিষ্কার বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দেওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। এ প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম উল্লেখ করতে হয় রোবোটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত আবিষ্কার ও তার প্রয়োগের কথা।

এই প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ধারণ ও তার সমাধান সহজে, দ্রুতগতিতে এবং নির্ভুল ভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিত্য নতুন আবিষ্কারগুলি আধুনিক শিক্ষাক্ষেত্রকেও বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে। শিক্ষাক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োগের ফলে শিক্ষাকে অনেক বেশি বাস্তবমুখী এবং যথাযথ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – গবেষণা ক্ষেত্রে ভূমিকাঃ


আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, বিশেষ করে গবেষণা সংক্রান্ত ব্যাপারে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ গবেষণার সাবেকি নিয়ম ও সমীকরণগুলিকে অতি দ্রুত বদলে দিচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির ফলে জ্ঞান আহরনের জন্য এখন আর মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় না। ঘরে বসেই আঙ্গুলের একটি ছোঁয়ায় বিশ্বমানের গবেষণাপত্র চোখের সামনে ভেসে উঠতে পারে।

আবহাওয়া নির্ণয়, জলবায়ুর চরিত্র নির্ণয়, ভূ-প্রাকৃতিক গবেষণা, জরিপ সংক্রান্ত গবেষণা ইত্যাদি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে অত্যন্ত নির্ভুল ও সহজ ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে। সভ্যতার উন্নতির প্রাথমিক পূর্বশর্তই হলো উন্নত গবেষণা। তাই গবেষণার পদ্ধতিকে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজতর করে তুলে তথ্যপ্রযুক্তি আদপে পৃথিবীর উন্নতির ক্ষেত্রেই সহায়তা করছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – বিনোদন ও তথ্যপ্রযুক্তিঃ রচনা


বিনোদনগত ক্ষেত্রেও বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ও বহুমুখী প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে আর বিনোদনের জন্য মানুষকে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় না। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির অভিনব মিলনের ফলে ঘরে বসেই একটি ক্লিকে বিশ্বমানের বিনোদনের আনন্দলাভ সম্ভব হচ্ছে।

মোবাইল, রেডিও, টেলিভিশন সবক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মানুষের কাছে বিনোদন পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠছে তাছাড়া বিনোদনের ক্ষেত্রেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের বিষয়টিও আজ সুবিদিত।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – যোগাযোগ বিপ্লবঃ রচনা


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমুল বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া। এই যোগাযোগ বলতে তথ্য আদান-প্রদান এবং পরিবহন সংক্রান্ত যোগাযোগ দুইই বোঝানো হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির বৈপ্লবিক বিবর্তনে আবির্ভূত হয়েছে ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইমেইল এর মতন ভার্চুয়াল সামাজিক তথা তথ্য আদান-প্রদানকারী মাধ্যমগুলি।

এইসকল মাধ্যমগুলিকে কাজে লাগিয়ে মুহুর্তের মধ্যে অতি মূল্যবান তথ্য সুরক্ষিতভাবে পৃথিবীর এক কোণ থেকে অপর কোনায় পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলে পরিবহনগত ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। এক্ষেত্রেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর ব্যবহারের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়।

ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকাঃ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


সমাজে সর্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের ফলে তথ্যপ্রযুক্তি সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্বজুড়ে বিপুল কর্মসংস্থানের। প্রতিবছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে লক্ষ লক্ষ যুবক যুবতী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার কোম্পানিতে নিয়োজিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির কর্মযজ্ঞকে নিয়ন্ত্রণ করে তারাই। পৃথিবীর অনেক দেশে তথ্যপ্রযুক্তি জাতীয় ক্ষেত্রে সর্বাধিক কর্মসংস্থান দেওয়ার মতন রেকর্ডও তৈরি করেছে।

নেতিবাচক প্রভাবঃ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


পৃথিবীকে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর উপহার তথ্যপ্রযুক্তি এনে দিলেও এর অনেক কুফলও রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই একদিকে যেমন সমাজের অভাবনীয় উন্নতি সম্ভব হচ্ছে, তেমনি সন্ত্রাসবাদের মতন সমাজের ধ্বংসাত্মক ক্ষেত্রগুলিতেও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটছে।

একদিকে যেমন মুহুর্তের মধ্যে মূল্যবান তথ্য অতি সহজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে প্রেরণ এবং সেই তথ্য সংরক্ষণ সম্ভব হয়েছে, তেমনি এই তথ্য-ও-যোগাযোগ-প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই বিশ্বব্যাপী তথ্য চুরি একটি বিশেষ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে হ্যাকিংয়ের কথা উল্লেখ করতেই হয়।

তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তির ফলে যেমন আধুনিক শপিং ব্যবস্থার বৈপ্লবিক উন্নতি সাধিত হয়েছে, তেমনই ব্ল্যাক মার্কেটের আধুনিকীকরণও তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির উপর ব্যাপক নির্ভরশীলতা মানুষের স্বাভাবিক কর্মদক্ষতাকে বর্তমানে বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে।

উপসংহারঃ – নেতিবাচক প্রভাবঃ – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


প্রযুক্তি হল সভ্যতার কাছে এক প্রকার আশীর্বাদস্বরূপ। আর তথ্যপ্রযুক্তি সেই আশীর্বাদের সবচেয়ে বড় উপহার। বর্তমান যুগ একদিকে যেমন তথ্য নির্ভর, তেমনি প্রযুক্তি নির্ভর। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে এই দুয়ের অভিনব মেলবন্ধন আজ সম্ভব হয়েছে।

বহু নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বের কথা আর অস্বীকার করা যায় না। বরং সার্বিকভাবে আমাদের সকলকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে কিভাবে তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবগুলিকে দূর করে এর ভালো দিকগুলির বিস্তার ঘটানো যায় সে ব্যাপারে।

সাথে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে প্রযুক্তির জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য প্রযুক্তি। তাই প্রয়োজন অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা দূর করে জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই বিজ্ঞানের এই উপহারের অস্তিত্বকে সার্থক করে তুলতে হবে।

https://www.youtube.com/watch?v=R8MqH0aOGiE

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা (৩)

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা ভূমিকা

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। শিল্প বিপ্লবের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন পৃথিবীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন উন্নতির ফলে গোটা বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি দূরকে এনেছে চোখের সামনে, পরকে করেছে আপন, আর অসাধ্যকে সাধন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। কারণ একবিংশ শতাব্দীর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ দুইই আবর্তিত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘিরে।

তথ্যপ্রযুক্তি কি?

তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির সমন্বয়কে তথ্যপ্রযুক্তি বলা হয়। কম্পিউটিং, মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয় তথ্যপ্রযুক্তির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

তথ্যপ্রযুক্তি ও বর্তমান বাংলাদেশ/তথ্যপ্রযুক্তিতে আমাদের বর্তমান অবস্থা

গত দুই দশকে বিশ্বজুড়ে ঘটেছে অভাবনীয় সব পরিবর্তন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ সময় ও দূরত্বকে জয় করেছে। বিশ্বকে এনেছে হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশও তথ্যপ্রযুক্তির এ জীয়নকাঠির স্পর্শে ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। গত দশ বছরে এ দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেছে। তথ্যপ্রযুক্তি যে বাংলাদেশের জন্যও সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি, এ কথা আজ সবাই উপলব্ধি করছে।

তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপারে খুবই আগ্রহ প্রকাশ করছে।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যে জীবনযাত্রার মান বদলে দিতে পারে তা বিশ্বাস করতে এখন আর কেউ ভুল করছে না। তাই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশে এখন অনেক বেড়েছে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে এখন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ থেকে ৮ হাজারের মতো। সারা দেশে কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের শো-রুম রয়েছে সহস্রাধিক। ঢাকাতেই গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠান। সফ্টওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও শতাধিক।

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সরকারের পদক্ষেপ

কোনো দেশকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের (শেখ হাসিনা সরকার) অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনা সর্বোচ্চ বিকাশের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন। ও লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের শাসনামলে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে সহায়ক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।


তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো। আর তাই দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন করা হচ্ছে। প্রায় সারা দেশ ডিজিটাল টেলিফোনের আওতায় চলে আসছে। ইতোমধ্যেই দেশের প্রতিটি জেলায় ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। শিগগিরই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।


তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত প্রসারের লক্ষ্যে সরকার ‘জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা’ অনুমোদন করেছে। এই নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের প্রয়াসে সরকার ঢাকার প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজারে ৭০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ফ্লোরে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি ‘আইসিটি ইনকিউবেটর’ স্থাপন করেছে।


বিদেশে বাংলাদেশের সফ্টওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে ‘আইসিটি বিজনেস প্রমোশন সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে।


তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে কালিয়াকৈরে ২৬৫ একর জমিতে হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। সম্প্রতি রেলওয়ের ফাইবার অপটিক লাইন সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।


অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা

তথ্যপ্রযুক্তিকে মূলধন হিসেবে ব্যবহার করে এবং মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ভারত, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। অথচ আমাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে আজ আমরা তথ্যের সুপার হাইওয়ের সাথে যুক্ত হতে পারছি না। আবার সরকারের অনীহার কারণে ফাইবার অপটিকস ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা। তাই আমাদের প্রচুর টাকা খরচ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে ভি স্যাটের লাইন। তবে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তথ্যপ্রযুক্তি খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্নভাবে অবদান রাখছে। দেশে কম্পিউটার সফ্টওয়্যার তৈরি বেশ বেড়েছে। দৈনিক পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারি হিসাবে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সফ্টওয়্যার রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা – সম্ভাবনাময় সফ্টওয়্যার শিল্প

বাংলাদেশে বর্তমানে সফ্টওয়্যার শিল্প সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে দেখা দিয়েছে। হার্ডওয়্যার নির্মাণের সঙ্গে এখনো বাংলাদেশ তেমনভাবে জড়িত হয়নি। এ দেশে সফ্টওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া সফ্টওয়্যার ও ওয়েব সফ্টওয়্যার। এর মধ্যে দেশে শিক্ষা ও বিনোদনে কম্পিউটারভিত্তিক মাল্টিমিডিয়ার বাজার অতি দ্রুত প্রসার হচ্ছে। দেশের ১৬ শতাংশ সফ্টওয়্যার ফার্ম তাদের ডেভেলপ করা সফ্টওয়্যার বিদেশে রপ্তানি করছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্য প্রযুক্তি শিল্প

বাংলাদেশে বর্তমানে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ৭-৮ হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হচ্ছে। তারা সহজেই ভালো উপার্জন করতে পারছে।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয়

বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের বিকল্প নেই। আমাদের দেশের শিক্ষিত তরুণ সম্প্রদায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাদের যোগ্যতা বারবারই প্রমাণ করেছে। তাই আমাদের তরুণদের মেধা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কার্যকরী করে তুলতে হবে। এজন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা দরকার।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা – জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন

জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গড়ে তোলা ব্যতীত বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের অংশীদার হওয়া সম্ভব নয়, যে রকম সংযোগ সড়ক ছাড়া মহাসড়কে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তথ্য অবকাঠামো ব্যতীত গ্রামীণ বাংলাদেশ তথ্য বৈষম্যের শিকার হবে, যা বাজার অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সুবিধালাভের সম্ভাবনাকে সংকুচিত করে ফেলবে। ফলে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক নতুন অর্থনীতির অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা – টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা তথ্য অবকাঠামোর মেরুদণ্ড। শক্তিশালী ও সুবিস্তৃত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যতীত তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। অথচ এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। টেলিনেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা – মানবসম্পদ উন্নয়ন

দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ সাধন সম্ভব নয়। তাই মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য।ইংরেজি শিক্ষাকে প্রযুক্তি শিক্ষা হিসেবে গুরুত্ব দেয়া।


বাস্তবভিত্তিক যোগ্যতা অর্জনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের ব্যবস্থা করাতে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি চালু করা : বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের যুগে জীবনযাত্রার সকল ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের প্রতি আমরা কত দ্রুত সাড়া দেব তার ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের বাংলাদেশের ভাগ্য। তাই আমাদের উচিত অতি দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি চালু করা।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণ

সুদক্ষ ব্যাংকিং ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। আর এই ব্যাংকিং খাতকে দক্ষ, যুগোপযোগী ও আধুনিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণের কোনো বিকল্প নেই।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষ সরকারব্যবস্থা গঠন

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন সাধন করার জন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষ সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলা। আর এ জন্য অন্যতম করণীয় হলো সরকারি তথ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা – উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিই বর্তমান বিশ্বে সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। তাই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও যুবদের বেকারত্ব দূর করার জন্য আমাদেরকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে – এটাই আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা।

https://www.youtube.com/watch?v=EvRZ0Wd_LvY

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা অ্যসাইনমেন্ট assignment (৪)

ভূমিকা – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

আধুনিক জীবনের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাচীন সভ্যতা থেকে শুরু করে আজকের এই নগর সভ্যতার দিকে তাকালে আমরা এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন লক্ষ করতে পারি।

এই যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। সমাজের যে স্তরে এখনো বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগেনি সে স্তরে এখনো উন্নতির ছোঁয়া প্রবেশ করতে পারেননি। তাই বলা যায় যে সভ্যতার উন্নয়নের মূলে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র সমূহ – – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


বর্তমান পৃথিবীতে যে দেশের মানুষজন লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত যারা জ্ঞান চর্চা করে সেই দেশ হচ্ছে সম্পদশালী দেশ। তথ্যের চর্চা আর বিশ্লেষণ থেকে জ্ঞান জন্ম নেয় তাই যে দেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে বিশ্লেষণ করতে পারে সেই দেশ হচ্ছে পৃথিবীর সম্পদশালী দেশ। বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

কৃষিক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

এখন কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে আইসিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যেখানে কৃষিবিষয়ক অনেক তথ্য সম্পর্কে কৃষকেরা জানতে পারে তাছাড়া মোবাইলে কৃষি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার লক্ষ্য করা যায়। রোগীর তথ্য সংরক্ষণ থেকে শুরু করে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় টেলিমেডিসিন প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে অনেক ডাগনেস্টিক সেন্টার রুগীদেরকে অলনাইলে রিপোর্ট দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।

পরিবেশ ও আবহাওয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য এখন আইসিটির ব্যবহার করা হচ্ছে। ১১ মে ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ করার হয়। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়লে তখন স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে দুর্গত এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব হবে।

গবেষণা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

গবেষণায় আইসিটির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমরা অনেক জটিল গবেষণা অনেক সহজে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে করতে পারছি।

ব্যাংকিং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

বর্তমানে প্রায় সব ব্যাংক অনলাইন সেবা দিচ্ছে ফলে এটিএম মেশিন থেকে যেকোনো সময় টাকা তোলা যায় তাছাড়া বর্তমান ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে

শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার শুধু গবেষণা আটকে নিন বড় শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যাধিক হারে লক্ষ্য করা যায় শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার প্রয়োজনেপ্রযুক্তি ব্যবহার করছে শিক্ষাক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ডিজিটাল ডিকশনারি বুক অনলাইন ক্লাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে

ব্যবসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা

ব্যবসাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে চোখে পরার মত। আমাদানি-রপ্তানি বেড়েছে কয়েকগুন। এর পিছনে মূল কারন হল উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা। ফলে অর্জিত হয়েছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা যা দেশের জিডিপিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে।

প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


বর্তমান বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা বলে শেষ করা যাবে না সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমোতে যাওয়া মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা আমাদের সময়কে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে কৃষি প্রযুক্তি দৌলতে আজ সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে বসেই শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে প্রযুক্তির বলে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলছে পাখা হিটার রেডিও টিভি ফ্রিজ ভিসিআর বিসিবি লিভ এয়ার কুলার কম্পিউটার চলছে শহর-নগরে যে আকাশচুম্বী বহুতলা ভবন গড়ে উঠেছে আমরা যে বাস-ট্রাক ট্যাক্সিতে করে যাওয়ার করছি তার সবগুলোই প্রযুক্তির অবদান।

https://www.youtube.com/watch?v=DyUNhtAZinQ

উপসংহার – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা


কালের বিবর্তনে মানব জীবন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তথ্য ও যোগাযোগ এর অবদান রয়েছে মানব জীবনে বিজ্ঞানের এ ব্যবহারকে ইতিবাচক দিকে রাখতে হবে তথ্য ও প্রযুক্তির আলোয় প্রতিটি মানুষকে আলোকিত করতে হবে সমস্ত কলুষতা থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে মুক্ত করার জন্য সকল ধরনের অপব্যবহার থেকে তথ্য কে সরিয়ে রাখতে হবে তবেই মানবসভ্যতা যথার্থ উন্নয়ন সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button