উ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ ২০২৪ – (120+ Muslim Girls Names With “U”)! মুসলিমদের জন্য নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রত্যেক মা বাবাকেই তাদের সন্তানদের নাম রাখার বিষয়ে যত্নশীল হতে হবে। এ পোস্টে আমরা “উ” দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো। উ দিয়ে যারা মেয়ে বাবুদের জন্য (u diye meyeder islamic name) নাম খুজছেন এ আর্টিকেল টি তাদের জন্য।
আমরা অনেক রিসার্চ করে যাচাই বাছাই করে উ দিয়ে সুন্দর সুন্দর মেয়েদের নাম গুলো আপনাদের জন্য বাছাই করেছি। নিচে উ দিয়ে মেয়ে শিশুর ইসলামিক নামের তালিকা দেয়া হলো, যা “উ” বা “U” দিয়ে শুরু হয়েছে।
শিশুর নাম রাখার ক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা
নাম হলো পরিচয় ও নিদর্শন। নামের আরবি হলো ‘ইসম’। ইসম অর্থ চিহ্ন, আলামত, পরিচিতি, লক্ষণ, উন্নয়ন, বর্ধন, সম্মান, সুনাম, যশ, খ্যাতি ইত্যাদি। মানুষ দুনিয়ায় আসার পর প্রথম যা লাভ করে তা হলো তার নাম-পরিচয়। মৃত্যুর পরেও মানুষের নাম বেঁচে থাকে। তাই শিশুর সুন্দর নাম তার জন্মগত অধিকার।
শিশুর নাম রাখবে কে
শিশুর নাম রাখার অধিকারী হলেন প্রথমত মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, ভাই-বোন, ফুফু-খালা, চাচা-মামা ও আত্মীয়-স্বজন। নাম যেন অর্থবহ হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। যে কেউ নামের প্রস্তাব বা পরামর্শ দিতে পারে। অভিজ্ঞ আলেম বা বিজ্ঞ ব্যক্তি প্রস্তাবিত নামের অর্থ, গুণাগুণ ও তাৎপর্য অনুসারে এর প্রাধান্য ব্যাখ্যা করবেন। সন্তানের অভিভাবকরা নাম গ্রহণে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সুন্দর অর্থবহ ও শ্রুতিমধুর নাম হওয়া বাঞ্ছনীয়
নাম অর্থবহ, সুন্দর, শ্রুতিমধুর ও সহজ হওয়া বাঞ্ছনীয়। মন্দ অর্থবহ বা গুণাগুণ সংবলিত নাম রাখা উচিত নয়। (বুখারি : ২/৯১৪) তাই ক্ষতিকারক ও আল্লাহর গজব সংবলিত ফণী, তিতলি ইত্যাদি কারো নাম রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। কেননা নামের প্রভাব মানুষের সত্তা ও গুণাগুণের ওপরও পড়ে। আর হাশরের ময়দানে প্রত্যেককে তার নামেই ডাকা হবে। (আবু দাউদ : ২/৬৭৬)
উ দিয়ে আপনার মেয়ে বাবুর নাম চূড়ান্ত করার আগে দয়া করে অবশ্যই আপনার স্থানীয় মসজিদের ইমাম অথবা একজন ভাল আলেমের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
উ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নামের তালিকা অর্থসহ
ক্রমিক নং | বাংলা | ইংরেজি | অর্থ | ভাষা |
১. | উকাব | Uqab | সম্পাদনকারী (কর্নেল) | আরবী |
২. | উকবা | Uqba | ফল, সমাপ্তি | আরবী |
৩. | উতবা | Utba | সুনজর, সন্তুষ্টি | আরবী |
৪. | উতবাহ | Utbah | পর্বতারোহনের পথ,উপাত্যকার মোড় | আরবী |
৫. | উবাইদা | Ubaida | প্রিয়বান্দা/বান্দী, ছোটদাস/দাসী | আরবী |
৬. | উরওয়া | Urwa | বন্ধন,মূল্যবানসম্পদ, সাহাবিরনাম | আরবী |
৭. | উসামা | Usama | সিংহ | আরবী |
৮. | উলিমা | Ulima | বুদ্ধিমান, ছালাক | আরবী |
৯. | উর্ভী | Urvi | বুদ্ধিমান, উদার | আরবী |
১০. | উদিতা | Udita | সূর্য্যদয় | আরবী |
১১. | উমারা | Umara | আলোকিতকরা, গরেতোলা, ঝোঁক | আরবী |
১২. | উমিদা | Umida | আশাবাদী | আরবী |
১৩. | উনাইসা | Unisa | ভালবন্ধু, | আরবী |
১৪. | উনাইফা | Unaifa | যারআত্মসম্মানআছে, মর্যাদাপূর্ন | আরবী |
১৫. | উম্মে আইমান | Umme Aiman | আশীর্বাদ, আইমানের মা | আরবী |
১৬. | উম্মে হামদি | Umme Hamdi | এমন একজন মহিলা যিনি সৃস্তিকর্তার প্রশংসা করেন | আরবী |
১৭. | উথিশ | Uthish | সত্যবাদী, সৎ | আরবী |
১৮. | উপমা | Upoma | প্রশংসা, সব থেকে উত্তম | আরবী |
১৯. | উসাইলা | Usaila | মধুময়ী | আরবী |
২০. | উম্মে কুলসুম | Umme Kulsum | দানশীল, স্বাস্থবলী | আরবী |
২১. | উম্মে সালমা | Umme Salma | কমনীয় | আরবী |
২২. | উম্মে হাবিবা | Umme Habiba | প্রেম পজ্ঞা | আরবী |
২৩. | উছরাত জামিলা | Umme Jamila | উত্তরাধিকারী | আরবী |
২৪. | উছরাত মাহমুদা | Umme Mahmuda | জ্ঞানের উত্তারাধীকারী, প্রশংসিতা | আরবী |
২৫. | উছরাত ফাহমিদা | Umme Fahmida | জ্ঞানী, বুদ্ধিমতী | আরবী |
উ দিয়ে দুই অক্ষরের মেয়েদের ইসলামিক নামঃ
- উম্মে আইমান,
- উম্মে হামিদা,
- উম্মে কুলসুম,
- উম্মে সালমা,
- উম্মে হাবিবা,
- উছরাত জামিলা,
- উছরাত মাহমুদা,
- উছরাত ফাহমি্দা,
- উছরাত জাহান,
- উম্মে আতিয়া
উ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
উ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম | নামের অর্থ |
উদ্যতি | উঁচু, ক্ষমতা |
উদ্ভুতি | অস্তিত্ব |
উদ্ভবী | সৃষ্টি, |
উদ্বুদ্ধা | জাগরিত, প্রবুদ্ধ |
উদ্বিতা | পদ্ম ফুলে ভরা দীঘি |
উদুলা | উচিত, ন্যায় |
উদিতা | যার উদয় হয়েছে |
উদারমতি | বুদ্ধিমান, উদার |
উদরঙ্গা | যার শরীর সুন্দর |
উদয়া | সূর্যের উদয় হওয়া |
উদয়শ্রী | সূর্যোদয় |
উদয়তি | উপরে ওঠা, উত্থান |
উদয়জোত | বাড়তে থাকা আলো |
উদন্তিকা | সমাধান, সন্তুষ্টি |
উথীশ | সত্যবাদী, সৎ |
উথামী | সৎ, সত্য, কপটহীন |
উথমী | যে বিশ্বাসযোগ্য |
উথমা | অসাধারণ, বিশেষ |
উত্তরীকা | নদী পার করা |
উত্তরিকা | কিছু দেওয়া, প্রদান করা |
উত্তরা | উত্তর দিক |
উত্তমজ্যোতি | দিব্য আলো |
উতারা | উচ্চতর, উত্তর |
উতাইকা | উদারতা, ধার্মিকতা |
উৎসুকা | উত্তেজনা |
উৎসা | বসন্ত ঋতু |
উৎলিকা | স্রোত |
উৎপালা | কমল, পদ্ম |
উৎপন্না | উৎপন্ন হওয়া |
উ দিয়ে মেয়ে বাচ্চার জন্য আরবি নাম
উ দিয়ে মেয়ে বাচ্চার জন্য আরবি নাম | নামের অর্থ |
উজ্জয়িনী | প্রাচীন শহর |
উজেশ | জয়, বিজয় |
উজালা | যে আলো ছড়ায় |
উজয়াতি | বিজয়ী |
উজমা | সবচেয়ে ভালো |
উচ্চলা | অনুভূতি, সংবেদন |
উগ্রতেজসা | শক্তি, এনার্জি, শক্তি |
উগ্রগন্ধা | এক ঔষধি |
উগ্বাদ | গোলাপ ফুল |
উক্তি | কথা, বাণী |
উৎপত্তি | সৃষ্টি, রচনা, নির্মাণ |
উৎকাশনা | প্রভাবশালী |
উৎকলীনা | ভব্য, চমৎকার |
উৎকলিকা | একটি তরঙ্গ, কৌতূহল |
উডেলা | সম্পন্ন, ধনী, ধনবান |
উঞ্জালী | আশীর্বাদ |
উজ্জ্বলা | উজ্জ্বল |
উজ্জ্বলতা | বৈভব, দীপ্তিমান, সৌন্দর্য |
উজ্জীবনী | আশাবাদী, জীবনে পূর্ণ |
উজ্জীতি | বিজয়, জয় লাভ |
নাম পরিবর্তন করা
কারো নাম ভালো অর্থবহ না হলে তা পরিবর্তন করে রাখা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সাহাবির এরূপ নাম পরিবর্তন করে রেখেছিলেন। (তিরমিজি : ২/১১১)
নাম রাখার সময়
সপ্তম দিন নাম রাখা ভালো। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘জন্মের সপ্তম দিন নবজাতকের নাম রাখো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৩২) আগে-পরে হলেও কোনো ক্ষতি নেই। জন্মের আগেও নাম নির্ধারণে বাধা নেই। (আবু দাউদ : ২/৪৪৬)
আকিকা
আকিকা করা একটি সুন্নত। সপ্তম দিন আকিকা করা আরেকটি সুন্নত। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘সপ্তম দিন রাসুল (সা.) হাসান (রা.) ও হোসাইন (রা.)-এর আকিকা দিয়েছেন এবং তাঁদের নাম রেখেছেন।’ (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৩১১) কোনো কারণে সপ্তম দিন আকিকা করা সম্ভব না হলে পরে সুবিধামতো সময়ে আকিকা করা যাবে। একটি ছাগল জবাই করার দ্বারা আকিকার সুন্নত আদায় হয়ে যায়। তবে ছেলেশিশু হলে দুটি ছাগল জবাই করা উত্তম। আকিকার গোশত কোরবানির গোশতের মতো সবাই খেতে পারে। (শরহুল মুহাজ্জাব : ৮/৪৩০)
নামের সঙ্গে বাবার নাম
বংশপরিচয়ের জন্য ছেলে বা মেয়ের নামের সঙ্গে বাবার নাম বা বংশের নাম ব্যবহার করা উত্তম। বিয়ের পর নারীর নামের সঙ্গে নিজ বংশের নামের পরিবর্তে স্বামীর বংশের নাম অথবা পিতার নামের পরিবর্তে স্বামীর নাম যুক্ত করা অযৌক্তিক। নবীপত্নীরা ও সাহাবায়ে কেরামের স্ত্রীরা এমনটি করেননি।
মা-বাবার নামের সঙ্গে মিল রাখা
সন্তানের নাম মা বা বাবার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা জরুরি নয়। একইভাবে জরুরি নয় ছেলের নামের সঙ্গে বাবার নাম ও মেয়ের নামের সঙ্গে মায়ের নাম অথবা তার বিপরীত উল্লেখ করা। অর্থাৎ মা-বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকা গুরুত্বপূর্ণ নয়, নামটি সুন্দর হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ।
জন্মনিবন্ধন
শিশুর নামকরণের পর তার জন্মনিবন্ধন করা উচিত। এতে তার নাগরিক অধিকার ও জাতীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত হয়। চিকিৎসাসেবা, শিক্ষালাভ ও আন্তর্জাতিক পরিষেবাগুলো প্রাপ্তির পথ সুগম হয়। ভবিষ্যতে সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আইনগত ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রহণ করা সহজ হয় এবং জটিলতামুক্ত হওয়া যায়।
উ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম সংক্রান্ত আমাদের অনুরোধ
উ দিয়ে আপনাদের মেয়ে বাবুর ইসলামিক নাম চূড়ান্ত বা ফাইনাল করার আগে অবশ্যই আপনার স্থানীয় মসজিদের ইমাম অথবা একজন ভাল আলেমের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। শুধু মাত্র অনলাইনে দেখেই বাচ্চার নাম ফাইনাল করবেন না, আমাদেরও ভুল হতে পারে। তাই অনুরোধ করবো ভালো কোন হুজুরের থেকে জেনে নেওয়ার জন্য।