ইসলামিক

ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণ ও ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় কীভাবে?

পৃথিবীতে ইসরাইলই একমাত্র দেশ যে কিনা তাদের প্রকৃত নাগরীক কে বিতারিত করে ঘড়ে উঠেছে। তাই ইসরায়েল কে একটি অবৈধ রাষ্ট্র হিসেবে গন্য করা হয়।

মাত্র ১০০ বছর আগেও ফিলিস্তিনের অবস্থা ছিলো অন্য রকম। তখন ফিলিস্তিনির অবস্থা এমন ছিলো যে তারা মৌলিক অধিকার পূরন করার পরও বিলাশী দ্রব্য ব্যবহার করতো।

ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধের মূল ৫ টি কারণ

ইসরাইল ফিলিস্তিন যুদ্ধ মূলত অনেক দিনের পুরনো। ইসরাইল প্রায় সব সময় ফিলিস্তিনি জনগনের উপর হামলা করে। তারা মূলত নিচের ৫ টি জিনিস চায়ঃ

১. ইসরাইলরা মনে করে ফিলিস্তিন তাদের ঐতিহাসিক বাস ভূমি,
২. ইসরাইলরা আল-আকসা মসজিদ তাদের দখলে নিতে চায়,
৩. আল-আকসা মসজিদ ভেঙ্গে তাদের পার্থনালয় নির্মান করতে চায়,
৪. ইসরাইলরা এ অঞ্চলে শুধু তাদের কৃতিত্ব বজায় রাখতে চায়,
৫. ইসরাইলরা ফিলিস্তিন নামের দেশকে মানচিত্র থেকে মুছে দিতে চায়।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন ম্যাপ

ইসরাইল-ফিলিস্তিন ম্যাপ

ফিলিস্তিনের ইতিহাস

অতীতে ফিলিস্তিন সিরিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হত। ১৫১৬ সালে ফিলিস্তিনের এ অঞ্চল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে আসে এবং ১৯১৮ সালের ১ম বিশ্ব যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত তা অটোমানদের অধীনে ছিলো।

তখন ফিলিস্তিন ছিলো অত্যান্ত একটি ব্যস্ততম এলাকা। এখানকার জেরু জালেম, হাইফা ও যাফা শহরে বাণিজ্যের ব্যপক প্রসার হয়েছিলো। তখনকার ফিলিস্তিনা ছিলো অত্যান্ত নম্র, বদ্র ও কর্মঠ।

কিন্তু ১ম বিশ্ব যুদ্ধে বদলে যায় সব। অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পূর্বে ফিলিস্তিন ইউরোপিয়ান দখলদার দের নজরে ছিলো। এ কারনে বিশ্ব যুদ্ধের পর ফ্রান্স ও ব্রিটেন এ অঞ্চলকে ভাগ করে নেয়ার পাঁয়তারা শুরু করে। ১৯২০ সালের ইটালির সান রিমো কনফারেন্সে বৃটিশরা ফিলিস্তিনের কৃতিত্ব লাভ করে। ১৯২২ সালে লি গভলেশন্স তা চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়।

প্রথম ফিলিস্তিন যুদ্ধ হয় কত সালে?

১৯৪৮ সালে প্রথম আরব ইসরাইল যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

প্রথম আরব ইসরাইল যুদ্ধ কখন সংঘটিত হয়?

১৯৪৮ সালে প্রথম আরব ইসরাইল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এর পর ১৯৫৬, ১৯৬৭, ১৯৭৩, ১৯৮২ এবং ২০০৬ সালে পুনরায় আরব ইসরাইল যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

ফিলিস্তিনের মাতৃভূমিতে কখন ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়?

ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা মূলত শুরু হয়ে ছিলো জায়নবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে। জায়নবাদী আন্দোলনকারীরে মনে করে ইহুদী একটি ধর্ম ও একটি রাষ্ট্র। উনিশ শতকের শেষের দিকে ইউরোপে ইহুদীদের প্রতি মানুষের বিদ্বেষ বাড়তে থাকলে ইহুদীরা নিজেদের জন্য আলাদা একটি দেশের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে।

জায়নবাদী বা জায়োনিস্টরা তখন বলে বেড়ায় ভূ-মধ্য সাগর থেকে জর্ডান নদীর পূর্ব তীর পর্যন্ত তাদের ঐতিহাসিক বাস ভূমি। আর তাই এখানেই ইহুদীদের জন্য আলাদা একটি দেশ গড়তে হবে।

১৮৯৭ সুইজারল্যান্ডের বাসেল শহরে প্রায় ২০৮ জন প্রতিনিধি নিয়ে ১ম জায়োনিস্ট কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন সেই সময়ের অস্থ হাংগেরিয়ান সাংবাদিক থিয়োডর হার্জেল। তিনিই ছিলেন আধুনিক জায়নবাদের জনক।

তিনি তার প্রকাশিত “দ্যা জুইস স্ট্যাট” বইয়ের মাধ্যমে জায়নবাদকে আন্তর্জাতিক আন্দোলনে রূপ দেন। এর পর থেকে জায়নবাদীরা ইউরোপের শাসক ও সকল শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের জন্য তদবির করতে থাকে।

ইউরোপে ইহুদিরা অর্থনীতিতে ভালো অবস্থান থাকায় তাদের এ চেষ্টা এক সময় সফল হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ জুড়ে রথসচাইল্ড পরিবারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ আরো সহজ করে দেয়।

১৯১৭ সালের ২রা নভেম্ভর বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বেলফোর সে সময়ের যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদী সম্প্রদায়ের নেতা লিওনেল ওয়াল্টার রথসচাইল্ডের কাছে একটি পত্র পাঠান।

উক্ত পত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের জায়োনিস্ট ফেডারেশনের কাছে পৌছে দিতে অনুরোধ করেন। এই পত্রকেই ঐতিহাসিক “বেল ফর ডিক্লারেশন” নামে অবিহিত করা হয়। মূলত এই ঘোষনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের মাতৃভূমিতে ইহুদীদের জন্য জাতীয় আবাস ভূমি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। ১৯২০ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনে জায়নবাদ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় নি।

প্রথম দিকে যাফা শহরের আশে পাশে উহুদিরা বসবাস করতে থাকে। কারণ তখন যাফা ছিলো ফিলিস্তিনের প্রধান শহর। তখন ইহুদিদের সংখ্যা ছিলো মাত্র ২,০০০। পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালে অস্বাবিক ভাবে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে আসতে থাকে।

তখন প্রায় ৬৫,০০০ ইহুদি ফিলিস্তিনে আসে। আসার সাথে সাথেই তাদের দেয়া ফিলিস্তিনি নাগরিকত্ব। কারণ ১৯২৩ সালে বৃটিশরা আইন করে রেখেছিলো “ফিলিস্তিনে আসা সকল ইহুদের কে ফিলিস্তিনি নাগরিকত্ব দেয়া হবে”। এর এভাবেই আগত ইহুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকে।

১৯৪৭ সালের ডিসেম্ভরে বৃটিশরা ঘোষনা করে ৫ মাস পর ফিলিস্তিনে তাদের শাসন শেষ করবে। ঠিক তখন থেকেই জায়নবাদী ইহুদী সন্ত্রাসীরা সারা দেশে নাশকতা শুরু করে।

১৯৪৮ সালের ১৪ মে বৃটিশ হুকুম শেষ হবার আগের দিন ইহুদী এজেন্সীর প্রধান ডেভিড বেনগুরিয়ন ইসরাইলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষনা দেন। এ ঘোষনার মধ্যে দিয়ে ফিলিস্তিনের মাতৃভূমিতে প্রায় ৭৮ শতাংশ জায়াগা নিয়ে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

ইসরায়েল ফিলিস্তিন দ্বন্দ কিভাবে শুরু হল? [ভিডিও]

গাজা ফিলিস্তিনের নাকি ইসরাইলের?

গাজা ফিলিস্তিনের অধীনে।

হামাস কি পশ্চিম তীরে আছে?

হ্যাঁ, হামাস পশ্চিম তীরে আছে।

ইসরাইলের আয়তন কত?

ইসরাইলের আয়তন আনুমানিকঃ ২০,৭৭০ – ২২,০৭২ কি.মি. বা ৮,৫২২ বর্গ মাইল।

ইসরায়েল রাজধানীর নাম কি?

ইসরায়েল রাজধানীর নাম জেরুজালেম।

ইসরায়েল কি এশিয়ার নাকি আফ্রিকার অংশ?

ইসরায়েল এশিয়ার অংশ। বিস্তারিত দেখুন ইউকি পিডিয়ার থেকে।

শেষ কথা

ইসরাইল কখনই চায়নি ফিলিস্তিনিরা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাক। কারণ তারা মনে করে এ অঞ্চল তাদের তীর্থ ভূমি।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সহযোগিতায় ইসরাইল খুব সহজে এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করে ও ফিলিস্তিনিদের উপর অত্যাচার শুরু করে।  এ অত্যাচার এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। আমরা আশা করি এ যুদ্ধ খুব শীঘ্রই শেষ হবে ও ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন দেশ পাবে ইনশাআল্লাহ্‌।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button