অগ্নি নিরাপত্তা

অগ্নি নির্বাপণের বহুল আলোচিত কার্যকর ৪টি পদ্ধতি

অগ্নি নির্বাপকের পদ্ধতি জানার আগে আমাদের দাহ্য বস্তু সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। সংক্ষেপে জেনে নেই দাহ্য বস্তু ও তার প্রকারবেদ সমূহ।
 

 

দাহ্য বস্তু কি? – What is Combustible Material?

সংক্ষেপে যা দ্বারা প্রজ্জ্বলন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় তাকেই দাহ্য বস্তু বলে। যেমনঃ চেয়ার, টেবিল, সুতা, কাপড়, পাট, লোহা, পিতল, কেরোসিন, কেমিক্যাল, মানুষ ইত্যাদি।
 
 

দাহ্য বস্তু কত প্রকার ও কি কি? – Types of Combustible Materials

ঘনত্ব ও প্রজ্জ্বলনতার উপর ভিত্তি করে দাহ্য বস্তু কে তিন শ্রেনীতে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ
১. সহজ দাহ্য বস্তু (Tinder Fuel),
২. মাঝারি ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু (Kindling Fuel),
৩. অধিক ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু (Bulk Fuel)।
 
 

১. সহজ দাহ্য বস্তু

যে সকল পদার্থ খুব সহজেই জ্বলে উঠে তাকে সহজ দাহ্য বস্তু বলে। যেমনঃ ক্রুড পেট্রোলয়াম অয়েল। সাধারণত ৭৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় এ সকল পদার্থ খুব সহজেই জ্বলে উঠে।
 
 

২. মাঝারি ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু

সহজ দাহ্য বস্তু অপেক্ষা এ জাতীয় দাহ্য বস্তুর ঘনত্ব বেশি তাই এ ধরনের দাহ্য বস্তুকে মাঝারি ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু বলে। যেমনঃ হোয়াইট স্পিরিট। ৭৩ থেকে ১৫০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় এ সকল পদার্থ জ্বলে উঠে।
 
 

৩. অধিক ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু

মাঝারি ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু অপেক্ষা এ জাতীয় দাহ্য বস্তুর ঘনত্ব বেশি তাই এ ধরনের দাহ্য বস্তুকে অধিক ঘনত্ব বিশিষ্ট দাহ্য বস্তু বলে। যেমনঃ সুতা, কাপড়, তুলা, কাঠ ইত্যাদি। ১৫০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের অধিক তাপমাত্রায় এ সকল পদার্থ জ্বলে উঠে।
 
 

অগ্নি নির্বাপণের বহুল আলোচিত কার্যকর ৪টি পদ্ধতি [The Effective Four Methods of the Fire Extinguishers]

আগুন নেভানোর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তবে তা নির্বর করে আগুনের আকার,পরিবেশ,প্রকৃতির উপর। এ সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে অগ্নি নির্বাপক পদ্ধতি কে চারভাগে ভাগ করা যায়, যা বহুল আলোচিত ও কার্যকর। যথাঃ
১. তাপ সীমিতকরণ পদ্ধতি (Cooling Method),
২. দাহ্যবস্তু সীমিতকরণ পদ্ধতি (Starvation Method),
৩. অক্সিজেন সীমিতকরণ পদ্ধতি (Smothering Method),
৪. অবিচ্ছিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার বাধাদান পদ্ধতি (Poisoning The Flame Method)।
 
 
নিচে এ চারটি পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

১. তাপ সীমিতকরণ পদ্ধতি

যে হারে তাপের উৎপত্তি হয় তার চেয়ে অধিক হারে তাপ সীমিত করে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া কে তাপ সীমিতকরণ পদ্ধতি বলে। যেমনঃ জ্বলন্ত দাহ্য বস্তুতে পানি দিয়ে তাপ সীমিত করে অথবা তার পার্শ্ববর্তী দাহ্য বস্তুতে পানি দিয়ে ঠান্ডা করার মাধ্যমে অগ্নি প্রজ্জ্বলনকে বাঁধা দিয়ে আগুন নিভানো।
 

 

২. দাহ্যবস্তু সীমিতকরণ পদ্ধতি

এ প্রক্রিয়ায় আগুনের নিকটের দাহ্য বস্তু সরিয়ে বা জ্বলন্ত বস্তুকে ছোট ছোট আগুনে ভাগ করে আগুন নির্বাপন করা হয়। জ্বলন্ত দাহ্য বস্তুকে সরিয়ে বা ছোট ছোট আগুনে পরিনত করে আগুন নিভানো হয় বলে এ পদ্ধতিকে দাহ্যবস্তু সীমিতকরণ পদ্ধতি বলে।
 

 

৩. অক্সিজেন সীমিতকরণ পদ্ধতি

প্রজ্জ্বলিত দাহ্য বস্তুর বা পার্শ্ববর্তী স্থান থেকে অক্সিজেন কমিয়ে অথবা অক্সিজেন প্রবেশে বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে আগুন নিভানো হয়। আগুন নিভানোর এ প্রক্রিয়া কে অক্সিজেন সীমিতকরণ পদ্ধতি বলে। যেমনঃ আগুনের উপর কিছুদিয়ে ঢেকে আগুন নিভানো যায় বা তেল বা কেমিক্যালের আগনে ফোম ব্যবহার করলে আগুনে অক্সিজেনের প্রবেশ বন্ধ হয়, যার ফলে সহজেই আগুন নেভানো যায়।
 
 

৪. অবিচ্ছিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার বাধাদান পদ্ধতি

জ্বলন্ত আগুনে ড্রাই কেমিক্যাল পাউডার নিক্ষেপ করলে পাউডারের কণা জ্বলন্ত দাহ্য বস্তুত অনুতে প্রবেশ করে অনুর কম্পনকে বাঁধা দানের মাধ্যমে রাসায়নিক বিক্রিয়ার অবিছিন্ন যোগসূত্রকে বিছিন্ন করে। এর ফলে আগুন নিভে যায়। আগুন নিভানোর উক্ত পদ্ধতি কে অবিচ্ছিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ার বাধাদান পদ্ধতি বলে।
 
উপরোক্ত ৪টি পদ্ধতি ছাড়াও বর্তমান সময়ে যে সকল পদ্ধতি ও অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম ব্যবহার করে আগুন নিভানো হয় সেগুলো হলঃ

অগ্নি নিরাপত্তা

ফায়ার সাপ্রেশনমেনুয়্যালফায়ার বাকেট
ফায়ার ব্ল্যাঙ্ককেট
বহনযোগ্য ফায়ার এক্সটিংগুইসার
অটোমেটিকগ্যাসাস ফায়ার
এরোসল ফায়ার সাপ্রেশন
অটোমেটিক ফায়ার এক্সটিংগুইসিং বল
ডিটেকশনহিট ডিটেকটর
স্মোক ডিটেকটর
ফ্লেম ডিটেকটর
নটিফিকেশনফায়ার এলার্ম
কন্ট্রোল প্যানেল
স্মোক ডিটেকটর
স্টেশন কল পয়েন্ট
নটিফিকেশন এয়াপ্লাইন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button